মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১২:৫৪ অপরাহ্ন

বার বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে-এ নিয়ে চিন্তায় আছি- মেয়র

রিপোটারের নাম
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১

নগরের জলাবদ্ধতা সংকট নিরসনে ১১ হাজার কোটি টাকার দুইটি মেগাপ্রকল্পের কাজ চলছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, প্রকল্পগুলো মূলত সিডিএ বাস্তবায়ন করছে। বার বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে-এ নিয়ে চিন্তায় আছি।

তিনি বলেন, নগরে ৫৭টি খলের মধ্যে ৩৩টি খাল চসিকের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এ খালগুলোর পুনরুদ্ধার, সংস্কার ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন কতটুকু সফল হতে পারে তা বুঝতে পারছি না। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন খালের ওপর যে বাঁধগুলো দেওয়া হয়েছিল, এখনো আছে সেগুলো অপসারণের কথা দিয়েও তা করা হয়নি। এ কারণে এবার বর্ষা মৌসুমে নগরে জলাবদ্ধতা প্রকট হয়েছে। ফলে নালা-নর্দমা-খালে পড়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

রোববার (২৯ আগস্ট) সকালে আন্দরকিল্লার নগর ভবনের কেবি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৭ম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, করোনাকালীন সংকট মোকাবেলায় লকডাউনের মধ্যেও আমরা জনগুরুত্বপূর্ণ জরুরি সেবা চলামান রাখলেও অনেক ক্ষেত্রেই পরিস্থিতিগত কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন লকডাউন অবমুক্ত হওয়ায় নির্ধারিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্ষমতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী লক্ষ্য পূরণে উদ্যমী হয়ে এ নগরকে সর্বসাধারনের বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে দৃশ্যমান সমস্যার আশু সমাধান এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য টেকসই উন্নয়ন অভিযাত্রায় চসিকের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের সবাইকে একযোগে অর্পিত দায়িত্ব পালনে নিবেদিত হতে হবে।

চসিকের নিজস্ব এখতিয়ারভুক্ত আয়ের উৎস রাজস্ব আদায় খাতকে গুরুত্ব দিয়ে মেয়র বলেন, চসিক কখনো সরকারি থোক বরাদ্দের ওপর নির্ভরশীল ছিল না এবং এখনো নেই। তাই রাজস্ব বিভাগকে আরও বেশি গতিশীল হতে হবে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কোথায় কোথয় অসামঞ্জস্য বা কর নির্ধারণগত ত্রুটি বিচ্যুতি ও পরিসংখ্যানগত জরিপের অভাব রয়েছে তা চিহ্নিত করে হালনাগাদ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যৌক্তিক আয়ের পরিধি বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে এ ক্ষেত্রে যেন করদাতাদের প্রতি কোনো অবিচার অন্যায় চাপ প্রয়োগ না হয়।

চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগে দক্ষ ও যোগ্য জনবল এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আবার বাড়তি ও অপ্রয়োজনীয় জনবলও রয়েছে। এ ছাড়া অত্যাধুনিক পরিচ্ছন্ন সরঞ্জাম এবং মশকনিধন সংক্রান্ত কার্যকর ওষুধেরও অভাব রয়েছে। যে ওষুধগুলো ছিটানো হয় তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগকে পর্যবেক্ষণ ও যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়ার পর তারা যে প্রতিবেদন দিয়েছেন সেই ভিত্তিতেই মশকনিধন কার্যক্রম চলমান থাকবে। নগরের নালা-নর্দমা-খাল সংস্কারের জন্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আশা করি তা অনুমোদন পাবে।

তিনি চসিকের ১১টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, পাশাপাশি বিনা খরচে ৫০ শয্যার একটি আইসোলেশন সেন্টারে কোভিড আক্রান্তদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আইসোলেশন সেন্টারে যারা কাজ করছেন এবং কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে চসিকের যে সব জনবল কাজ করছে তাদেকে ৩০শতাংশ হারে অতিরিক্ত ভাতা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। ইতিমধ্যে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। নগরায়নের ক্ষেত্রে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে শিশু পার্ক স্থাপন করা হবে।

চসিক সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, বিভাগীয় ও শাখা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ