দি বাংলা খবর ডেস্ক : বেবি ইন্টারন্যাশনাল খাতুনগঞ্জ এলাকার মসলাজাতীয় পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছরের মতো তারা জুলাইয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মসলাজাতীয় পণ্য এলাচি আমদানি করে। কিন্তু আমদানি পণ্য ছাড়করণ প্রক্রিয়া শেষে খালাস করার আগে বন্দর ইয়ার্ড-৬ এফসিএল কনটেইনারটির সিল ভাঙা পাওয়া যায়, যা বন্দরের টার্মিনাল ম্যানেজারের এক রিপোর্টেও উঠে আসে। এছাড়া একই আমদানিকারকের আরেক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের রমজানেও আমদানি করা এলাচি খোয়া যায়। এ নিয়ে অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
বন্দর কর্তৃপক্ষ ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, বেবি ইন্টারন্যাশনাল খাতুনগঞ্জ নবী সুপার মার্কেটের এলাকার মসলাজাতীয় পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে শিপমেন্ট করা মসলাজাতীয় পণ্য এলাচি আমদানি করা এফসিএল কনটেইনার জুলাইয়ে ‘এক্সপ্রেস করিমা’ নামের জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। কিন্তু আমদানি পণ্য ছাড়করণ প্রক্রিয়া শেষে খালাস নেয়ার আগে গত ১৬ জুলাই বন্দর ইয়ার্ড-৬ এফসিএল কনটেইনারটির (কনটেইনার নং ডঐখট-২৭৯৭২৭৬*২০) সিল ভাঙা পাওয়া যায়।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, এ সময় আমদানি পণ্যের মধ্যে ২৫ কেজি এলাচি কম পাওয়া যায়, যার বাজারমূল্য ৭৫ হাজার টাকা। এছাড়া একই আমদানিকারকের আরেক সহযোগী প্রতিষ্ঠান মাহফুজা এন্টারপ্রাইজের রমজানে গুয়েতেমালা থেকে আমদানি করা কনটেইনার থেকে ৪৮০ কেজি এলাচি খোয়া যায়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোয় অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। শুধু তা-ই নয়, একই মার্কেটের অমর কুমার দাশসহ বিভিন্ন সময় মসলাজাতীয় পণ্যের আমদানিকারকরা এ ধরনের ঘটনার শিকার হন।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী অসীম কুমার দাস বলেন, জুলাইয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা এলাচির কনটেইনার থেকে এলাচি চুরি হয়েছে, যা আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এর আগেও ৪৮০ কেজি চুরি হয়েছিল। শুধু তো আমরা নই, মসলাজাতীয় পণ্যের অনেক আমদানিকারক এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন। এত নিরাপত্তার মধ্যে থেকে
কীভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে, চিন্তা করা অসম্ভব। শুনেছি লোহার স্ক্র্যাপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের পণ্যও চুরি হয়। এমনকি বিদেশি জাহাজ থেকে তেল চুরির ঘটনা তো আছে। এদের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন এখন পর্যন্ত নিতে দেখিনি। আর এসব ঘটনা বহির্বিশ্বে জানলে তো আমাদের পোর্টের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাই বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে আরও নিরাপত্তা বাড়াতে হবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, অনেক সময় রপ্তানিকারকের পক্ষ থেকে জাহাজে তোলার সময়, অথবা জাহাজ থেকে নামানো সময়, কিংবা অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের (কাস্টমস, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট) কারণে সিল ভাঙা কনটেইনার পাওয়া যেতে পারে। কিংবা বন্দর ইয়ার্ডের কোনো এক পয়েন্টে কোনো চক্র ভাঙতে পারে। এমনও হতে পারে কোনো দুষ্কৃতকারী চক্র এমন কাজ করতে পারে। মাঝেমধ্যে এ ধরনের কিছু সিল ভাঙার বিষয় শোনা যায়। আর এ ধরনের ঘটনা তদন্ত করার পর সঠিক কারণ পাওয়া যেতে পারে। বন্দরের লোক দোষী হলে অবশ্যই আইনানুসারে শাস্তি পাবে।