টোকিও অলিম্পিকে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করতে শক্তিশালী স্পেনের বিপক্ষে জিততেই হতো আর্জেন্টিনার।
গত দুই ম্যাচে এক জয় ও এক হার দিয়ে নিজেদের ‘সি’ গ্রুপে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ফার্নান্দো বাতিস্তার দল।
প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২-০ গোলে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে মিসরকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা।
তাই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে স্পেনের বিপক্ষে আজ জিততেই হবে।
এমন খাদের কিনারায় থেকে বাংলাদেশ সময় আজ বিকাল ৫টায় সাইতামা স্টেডিয়ামে শুরু স্পেনের মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা।
কিন্তু আলবিসেলেস্তেরা পারেনি। কোপা আমেরিকা জয়ী দেশটির অনুর্ধ্ব-২৩ দল পারেনি অলিম্পিকের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে।
স্পেনের সঙ্গে ১-১ সমতায় ম্যাচ শেষ করে টুর্নামেন্টকে বিদায় জানিয়েছে আর্জেন্টিনা।
এর আগের ম্যাচে সৌদি আরবকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ব্রাজিল। কিন্তু কোপা জয়ী আর্জেন্টিনার তরুণ দল তা পারল না।
খেলায় প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করে আর্জেন্টিনা। ২১ মিনিটে মেরিনোর নেওয়া ফ্রি-কিক স্পেনের গোলপোস্টের খানিকটা ওপর দিয়ে চলে যায়।
এর দুই মিনিট পরই দুর্দান্ত এক হেডে বল জালে জড়ানোর চেষ্টা করেন আর্জেন্টাইন তারকা গাইস। কিন্তু বল গ্লোভসবন্দি করেন স্পেনের গোলরক্ষক।
৩৫তম মিনিটে স্পেনের কুকুরেলা দারুণ নৈপূণ্য দেখান। বল নিয়ে আর্জেন্টিনার রক্ষণে সতীর্থ ওয়ারজাবালের কাছে দেন। কিন্তু ওয়ারজাবাল পোস্টের অনেক উপর দেয়ে বল উড়িয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন।
৪০তম মিনিটে স্পেনের ভাগ্যে ফ্রি-কিক জুটে। জোরালো কিক নেন দানি ওলমো। কিন্তু শট আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক লেদেমসাকে কিছুই করতে হয়নি। গোলবারের ওপর দিয়ে উড়ে যায় বল। রেফারির দেওয়া অতিরিক্ত এক মিনিট সময়েও স্কোরের খাতায় নাম লেখাতে পারেননি দুদলের কেউ।
ফলে গোলশূন্য অবস্থায় প্রথমার্ধ শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমেই ওয়ারজাবাল তার কারিশমা দেখান। ৫৫তম মিনিটে বল নিয়ে দ্রুতগতিতে ঢুকে পড়েন আর্জেন্টাইন রক্ষণে। বাঁ-পায়ের শটও নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশ হতে হয় তাকে।
পাল্টা আক্রমণে স্পেনের জালের কাছে বল নিয়ে ছুটে যান ভেরা। তবে স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমনকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।
অবশেষে ৬৬তম মিনিটে জালের ঠিকানা খুঁজে পেল স্পেন। ওলমো ক্রস থেকে ভেসে আসা বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন মেরিনো। লেদেসমাকে পরাস্ত করে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়িয়ে দেন।
১-০ তে লিড নেয় স্পেন।
গোলটি দেন।গোল শোধ করবে কি ৭৬ মিনিটের সময় আরো একটি গোল হজম করতে বসেছিল আর্জেন্টিনা।
মার্কো আসেনসিওর দুর্দান্ত এক শট রুখে দেন লেদেসমা। ব্যবধান আর দ্বিগুণ হতে দেননি তিনি।
৮০তম মিনিটে মাঝমাঠে স্প্যানিশ মিডফিল্ডারকে ফাউল করে হলুদকার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার ক্লাউদিয়া ব্রাভো। এর দুই মিনিট পরেই ব্রাভোকে টেনে ধরে রাখায় হলুদ কার্ড দেখেন স্পেনের ওসকার গিল।
গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। একের পর এক চেষ্টা করতে থাকে আলবিসেলেস্তেরেরা। অবশেষে আর্জেন্টাইন শিবিরে বাঁধভাঙা উল্লাসের উপলক্ষ হন বেইমন্তে।
কর্নার ক্রিক থেকে হাওয়ায় উড়ে আসা বলে মাথা ছুঁইয়ে স্পেনের জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। দলকে ১-১ সমতায় ফেরান।
খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৯১তম মিনিটে আর্জেন্টিনার রক্ষণের কাছে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন মসেভিচ।
৯৪তম মিনিটে বাঁশিতে শেষ ফু দেন রেফারি। ১-১ সমতাতেই স্পেনের সঙ্গে ড্রয়ে খেলা শেষ করে আর্জেন্টিনা।
এ ফলাফলের পর ১ জয় ও দুই ড্রয়ে আর্জেন্টিনা ও স্পেনের সমান ৫ পয়েন্ট। তবে গোলের ব্যবধানে এগিয়ে রইল স্পেন।
অলিম্পিকের ফুটবল ইভেন্টকে বিদায় জানাল আকাশি-সাদার জার্সির দল।