দি বাংলা খবর ::চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নান্দনিক বাড়িটি প্রত্নসম্পদ হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকে সকালে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক এই বাড়িটি পরিদর্শন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান এই নির্দেশনার কথা সাংবাদিকদের জানান। এই সময় তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী নান্দনিক ঘরটিকে ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঘরটি যে অবস্থায় আছে সেভাবেই সংরক্ষণ করা হবে। সেজন্য এই ঘরটি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ প্রক্রিয়া আজকে থেকে শুরু হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সাথে এসি ল্যান্ড সদর উপস্থিত হয়ে ঘরটি পরিদর্শন করে তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ঐতিহাসিক ভবনটি পরিদর্শন করেন।
গবেষণা কেন্দ্র থেকে গত চারদিন ধরে এই ঐতিহাসিক ভবনটি এই দাবির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হয়। এই বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের উপদেষ্টা জনাব চৌধুরী ফরিদ। তিনি বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা ও সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভবনটি রক্ষা হয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ ও আনন্দিত।
এই বিষয়ে চট্টগ্রামের ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান বলেন, মোঘল স্থাপত্য রীতিতে তৈরী এই ভবনটি একটি নান্দনিক স্থাপনা। চট্টগ্রামে অনেক মোগল স্থাপনা থাকলেও কলসির উপর মোঘল স্থাপত্য রীতিতে তৈরী ভবন এই প্রথম আবিষ্কৃত হল। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা আমাদেরকে অভিভূত করেছে। এই ভবনটি সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হলে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা যেমন দেখতে আসবেন। তেমনি ভবনটি মধ্যযুগীয় অনন্য স্থাপনারীতি ও সংস্কৃতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যা চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের ধারক হিসাবে বিবেচিত হবে।
এর আগে চট্টগ্রাম জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর এর সহকারী পরিচালক ডঃ আহমেদ আব্দুল্লাহ এই বাড়িটি পরিদর্শন করেন সার্বিক বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অবহিত করেন। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, মোঘল আমলের শেষ দিকের এই স্থাপনাটি তিন শত বছরের পুরানো এটা সঠিক।কলসির উপর নির্মিত ভবন চট্টগ্রামে এই প্রথম আবিষ্কৃত হলো। এ ধরনের ঐতিহাসিক স্থাপনা প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করা খুবই জরুরী।
চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়ী বক্সির হাটের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তুল্লাহ সওদাগর ১৭ শতাব্দীতে এই ভবনটি নির্মাণ করেন। তার দুটি সরের জাহাজ ছিল। যা দিয়ে রেঙ্গুনের সাথে ব্যবসা করতো। রেঙ্গুন এই কলসি এনে তৎকালীন ২৫ হাজার টাকায় এই ভবনটি তৈরি করেন বলে সওদাগরের চতুর্থ প্রজন্মের ওয়ারিশরা জানান।